ডেস্ক রিপোর্ট।
০৫ জুন ২০২৫, ১৭:৩৬ পিএম
ছবিঃ সংগৃহীত।
প্রতি বছরের মতো এবারও পবিত্র হজের মূল দিন ৯ জিলহজে আরাফাতের ঐতিহাসিক ময়দান থেকে হজের খুতবা প্রদান করা হয়েছে। বৃহস্পতিবার (৫ জুন) মসজিদে নামিরা থেকে এই খুতবা দেন সৌদি আরবের প্রভাবশালী আলেম ও মসজিদুল হারামের খতিব শায়খ ড. সালেহ বিন হুমাইদ।
খুতবায় তিনি মুসলিম উম্মাহকে আল্লাহর প্রতি পূর্ণ আনুগত্য, গুনাহ থেকে ক্ষমা প্রার্থনা এবং তাকওয়াপূর্ণ জীবন যাপনের আহ্বান জানান। তিনি বলেন, “যারা আন্তরিকভাবে তওবা করবে ও ক্ষমা চাইবে, আল্লাহ তাদের জন্য চিরস্থায়ী জান্নাতের প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন।”
তিনি আরও বলেন, “ইসলাম হলো একমাত্র আল্লাহর ইবাদত করা এবং তাঁর নির্দেশ পালন করা। নামাজ, রোজা, জাকাত এবং হজ—সব ইবাদতই আল্লাহর সন্তুষ্টির জন্য।” নবী করিম (সা.)-এর বাণী উল্লেখ করে তিনি বলেন, “আল্লাহ চান, মানুষ যেন তাকওয়াবান হয়, এবং একমাত্র তাঁরই ইবাদত করে।”
সমাজে সৌহার্দ্য ও বন্ধনের গুরুত্ব তুলে ধরে শায়খ সালেহ বলেন, “তোমরা পরস্পরের ভ্রাতৃত্ব রক্ষা করো, আত্মীয়তার সম্পর্ক বজায় রাখো এবং আল্লাহর ইবাদতে দৃঢ় থেকো।”
বিশ্ব মুসলিমের একত্রিত হওয়ার এই মাহেন্দ্রক্ষণে তিনি বলেন, “আজ এমন একটি দিন, যেদিন আল্লাহ অগণিত মানুষকে জাহান্নাম থেকে মুক্তি দেন। আমরা এই দিনে সম্মিলিতভাবে তাঁর রহমত ও মাগফিরাত কামনা করি।”
ফিলিস্তিনের মুসলমানদের প্রতি সহমর্মিতা প্রকাশ করে তিনি বিশেষ দোয়া করেন: “হে আল্লাহ, আপনি ফিলিস্তিনের মুসলমানদের হেফাজত করুন, তাদের ওপর আপনার রহমত বর্ষণ করুন এবং আপনার ও তাদের শত্রুদের বিরুদ্ধে তাদেরকে সাহায্য করুন।”
বিশ্ব মুসলিমদের জন্য গুরুত্বপূর্ণ এই খুতবা যাতে সবাই অনুধাবন করতে পারে, সেজন্য সৌদি সরকার এটি বাংলা, ইংরেজি, চাইনিজ, রুশ, তুর্কি, রোহিঙ্গা, ফরাসি, তামিল, পশতুসহ প্রায় ৩৫টি ভাষায় অনুবাদ করে সম্প্রচার করেছে।
খুতবার পর হাজিরা সূর্যাস্ত পর্যন্ত আরাফার ময়দানে অবস্থান করেন। সেখানে তারা দোয়া, ইস্তিগফার ও ইবাদতে রত থাকেন এবং একত্রে আদায় করেন জোহর ও আসরের নামাজ। এরপর রওনা হন মুযদালিফার উদ্দেশ্যে, যেখানে খোলা আকাশের নিচে রাত কাটিয়ে একত্রে আদায় করেন মাগরিব ও এশার নামাজ।
পরদিন ফজরের নামাজ শেষে হাজিরা রওনা হবেন মিনার জামারাতে, যেখানে ইসলামের চিহ্নিত শয়তানকে পাথর নিক্ষেপ করবেন। এটি হজের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ অংশ।