মোবাইল আর্থিক সেবা প্রতিষ্ঠান (এমএফএস) বিকাশের গ্রাহকেরা এখন থেকে তাৎক্ষণিকভাবে ক্ষুদ্রঋণ নিতে পারবেন। গ্রাহকদের ডিজিটাল উপায়ে তাৎক্ষনিকভাবে জামানতবিহীন ঋণ দেবে বেসরকারি খাতের দ্য সিটি ব্যাংক লিমিটেড। এর মাধ্যমে বাংলাদেশ ডিজিটাল ক্ষুদ্রঋণের (ন্যানো লোন) যুগে প্রবেশ করলো।
বিকাশ অ্যাপ ব্যবহার করে গ্রহাকদের ঋণ নিতে হবে। এই ঋণের আওতায়, ঋণ প্রাপ্তির যোগ্যতা সাপেক্ষে গ্রাহক তাৎক্ষণিকভাবে বিকাশ অ্যাকাউন্টে ৫০০ থেকে ২০ হাজার টাকা পর্যন্ত সিটি ব্যাংকের জামানতবিহীন ডিজিটাল ন্যানো লোন পাবেন। বার্ষিক ৯ শতাংশ ইন্টারেস্টে ৩টি মাসিক ইনস্টলমেন্টে বিকাশ অ্যাপ থেকে ঋণ পরিশোধও করতে পারবেন ঋণগ্রহীতারা।
বুধবার ঢাকার একটি পাঁচতারকা হোটেলে আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহ্মেদ পলক এই ডিজিটাল ঋণ সেবা কার্যক্রম উদ্বোধন করেন।
এ সময় তিনি বলেন, ‘ব্যাংকিং সেবার বাইরে থাকা মানুষের জন্য ব্যাংকের জামানতবিহীন তাৎক্ষণিক ঋণ পাওয়ার সুযোগ-এটাই ডিজিটাল বাংলাদেশের সফলতার গল্প। কেন্দ্রিয় ব্যাংকের নীতি সহায়তায় সিটি ব্যাংক ও বিকাশের এই যুগান্তকারী উদ্যোগ দরিদ্র মানুষের ঋণ প্রাপ্তিকে সহজ করবে।’
তিনি অন্যান্য বাণিজ্যিক ব্যাংকেও এভাবে ডিজিটাল ক্ষুদ্র ঋণ চালু করার আহবান জানান।
অনুষ্ঠানে বাংলাদেশ ব্যাংকের ডেপুটি গভর্নর আবু ফরাহ মো. নাছের বলেন, সরকারের অন্তর্ভুক্তিমূলক অর্থনীতির কল্যাণে বাংলাদেশের ব্যাংকিং খাত এখন আরও বেশি জনবান্ধব, আরও বেশি ডিজিটাল। ডিজিটাল ন্যানো লোন সেবা অর্থনৈতিক অন্তর্ভুক্তিকরণকে আরও বেগবান করবে বলে তিনি আশাবাদ ব্যক্ত করেন।
অনুষ্ঠানে জানানো হয়, গ্রাহকের বিকাশ লেনদেন এবং সিটি ব্যাংকের ক্রেডিট রিস্ক ম্যানেজমেন্ট পলিসির উপর ভিত্তি করে ঋণ পাওয়ার উপযুক্ততা এবং ঋণের পরিমান নির্ধারিত হবে। ডিজিটাল ন্যানো লোন চালু উপলক্ষে সিটি ব্যাংক ঋণগ্রহীতাদের কাছে থেকে পরবর্তী ঘোষণা না দেয়া পর্যন্ত কোনো প্রসেসিং ফি নেবে না।
প্রযুক্তি সহায়তায় সিটি ব্যাংকের ডিজিটাল ন্যানো লোনের ক্ষেত্রে দৈনিক হারে ইন্টারেস্ট নির্ধারিত হবে। ফলে একজন ঋণগ্রহীতা মেয়াদ পূর্তির আগেও ঋণ পরিশোধ করতে পারবেন এবং সেক্ষেত্রে তাকে শুধুমাত্র সেই ক’দিনের জন্যই সুদ বহন করতে হবে।অগ্রীম নিষ্পত্তির জন্যও কোনো বাড়তি খরচ হবে না। ঋণগ্রহীতাদের নোটিফিকেশনের মাধ্যমে ঋণ পরিশোধের নির্দিষ্ট তারিখ জানিয়ে দেওয়া হবে।
সিটি ব্যাংকের ডিজিটাল ন্যানো লোন-এর মতো উদ্ভাবনী সেবা আনার ক্ষেত্রে বিশেষ ভূমিকা পালন করেছে বিকাশ ও এর কৌশলগত অংশীদার অ্যান্ট গ্রুপ। ঋণ নেয়ার জন্য উপযোগী গ্রাহককে তাদের বিকাশ অ্যাপের ‘ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানের লোন’ আইকনে ট্যাপ করতে হবে। পরবর্তী ধাপে সিটি ব্যাংক অনুমোদিত সীমার মধ্যে কাঙ্খিত ঋণের পরিমাণ লিখতে হবে এবং শর্তাবলীতে সম্মতি দিতে হবে। এরপর বিকাশ পিন দিলে সাথে সাথেই বিকাশ অ্যাকাউন্টে ঋণের টাকা পেয়ে যাবেন গ্রাহক।
সিটি ব্যাংকের চেয়ারম্যান আজিজ আল কায়সার বলেন, এই ঋণ নিতে গ্রাহকদের ব্যাংকে অ্যাকাউন্ট থাকার কোনো প্রয়োজন পড়বে না। তারা নিজ নিজ বিকাশ অ্যাকাউন্টের মাধ্যমেই এই ঋণ নিতে ও পরিশোধ করতে পারবেন। ঋণ নেওার জন্যে কোনো জামানতেরও প্রয়োজন হবে না। ফলে ক্ষুদ্র ব্যবসায়ের প্রসার ঘটবে।
ডিজিটাল ন্যানো লোন সেবা বাণিজ্যিকভাবে চালু করার বিষয়ে সিটি ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও সিইও মাসরুর আরেফিন বলেন, ‘এত দিন আর্থিক অন্তর্ভূক্তির নামে শুধু টাকা পাঠানো ও টাকা জমা হয়েছে। সবাই গ্রাম থেকে আমানত সংগ্রহে মনোযোগ দিয়েছেন। ফলে আর্থিক অন্তর্ভূক্তিতে নৈতিক সমস্যা ছিল। এখন বিকাশের মাধ্যমে সিটি ব্যাংকের ঋণ পৌঁছে যাবে সবার হাতে হাতে। এতে তাৎক্ষণিক ঋণের চাহিদা মিটবে ও চড়া সুদ পরিশোধ থেকে দেশের মানুষকে মুক্তি দেবে। এর মাধ্যমে ডিজিটাল বাংলাদেশ বাস্তবায়নে আরও এক ধাপ অগ্রগতি হবে। বদলে যাবে দেশের অর্থনীতি।
অনুষ্ঠানে বিকাশের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা কামাল কাদীর বলেন, ব্যাংক ও এমএফএসের মধ্যে আন্তঃলেনদেন সেবার কল্যাণে অনেক সম্ভাবনার দ্বার উন্মোচিত হয়েছে। বিকাশের মত কার্যকর ডিজিটাল প্ল্যাটফর্ম ও বিশাল গ্রাহক আরও সহজে পৌঁছানোর সুযোগ তৈরি হবে বলে আশা প্রকাশ করেন তিনি।
অনুষ্ঠানে অন্যান্যের মধ্যে সিটি ব্যাংকের ডিজিটাল ফাইন্যান্সিয়াল সার্ভিসেস-এর প্রধান মো. জাফরুল হাসান, বিকাশ-এর চিফ কমার্শিয়াল অফিসার আলী আহম্মেদসহ উভয় প্রতিষ্ঠানের উর্দ্ধতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
সম্পাদক ও প্রকাশক: কাজী আবু জাফর
যোগাযোগ: । [email protected] । বিজ্ঞাপন ও বার্তা সম্পাদক: 01894944220
ঠিকানা: বার্তা ও বাণিজ্যিক যোগাযোগ : বাড়ি নম্বর-২৩৪, খাইরুন্নেসা ম্যানশন, কাঁটাবন, নিউ এলিফ্যান্ট রোড, ঢাকা-১২০৫।
© 2024 Sangbad Sarabela All Rights Reserved. Design & Developed By Root Soft Bangladesh