দীর্ঘ তিন মাস ধর্ষকের হাতে নির্যাতনে প্রথমে ডান চোখ হারায় ময়মনসিংহের নান্দাইল উপজেলার সিংরইল ইউনিয়নের এক মাদরাসাছাত্রী। পরে অর্থাভাবে চিকিৎসা থেমে যায়। গত সোমবার (১৬ ডিসেম্বর) দুপুরে নিজ বাড়িতে মারা যায় ওই মাদরাসাছাত্রী। ধর্ষণে অভিযুক্ত কিশোর (১৭) একই ইউনিয়নের বাসিন্দা ও দশম শ্রেণির ছাত্র।
ধর্ষিতাকে নির্যাতন করে হত্যা ও ধর্ষককে গ্রেফতারের দাবীতে বৃহস্পতিবার (১৯ ডিসেম্বর) সকালে রূপান্তর সাংস্কৃতিক সংগঠনের ব্যানারে মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়। মানববন্ধনে বক্তারা বলেন, তিন দিনের মধ্যে ধর্ষককে গ্রেফতারে ব্যর্থ হলে নান্দাইলে সর্বাত্নক হরতালের ডাক দেয়া হবে।
ভুক্তভোগীর পরিবার ও পুলিশ সূত্র জানায়, ওই কিশোরীকে প্রেমের প্রস্তাবসহ বিভিন্নভাবে উত্ত্যক্ত করতো অভিযুক্ত কিশোর। গত ১ জুন প্রাইভেট পড়তে যাওয়ার সময় মেয়েটিকে দলবলসহ উঠিয়ে নারায়ণগঞ্জে নিয়ে যায় সে। ওইসময় বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন শুরু হলে থানায় গিয়ে কোনো ধরনের আইনি সহায়তা পায়নি মেয়েটির পরিবার। তার সন্ধানও পাওয়া যায়নি। গত ৬ সেপ্টেম্বর দুপুরে মেয়েটিকে বাড়ির সামনে ফেলে রেখে যায় অভিযুক্ত কিশোর।
খবর পেয়ে পরিবারের লোকজন তাকে উদ্ধার করে স্থানীয় পল্লিচিকিৎসকের কাছে নিয়ে যান। সেখান থেকে ময়মনসিংহ ও পরে ঢাকার আগারগাঁও চক্ষু বিজ্ঞান ইনস্টিটিউটে তাকে ভর্তি করা হয়। সেখানে বাম চোখ বাঁচাতে আঘাতপ্রাপ্ত ডান চোখটি উঠিয়ে ফেলা হয়, যা বর্তমানে মেয়েটির বাড়ির ফ্রিজে সংরক্ষিত রয়েছে।
এ ঘটনায় নির্যাতনের শিকার মেয়েটির পরিবারের পক্ষ থেকে ময়মনসিংহের নারী ও শিশু নির্যাতন ট্রাইব্যুনালে মামলা করা হলেও অভিযুক্তকে গ্রেফতার করা হয়নি।
ধর্ষিতার বাবা আবুল কালাম জানান, আমার মেয়েকে শারীরিক নির্যাতন করে হত্যা করা হয়েছে। আমি আমার মেয়ে হত্যার বিচার চাই।
এ বিষয়ে পিবিআই ময়মনসিংহের পুলিশ সুপার মো. রকিবুল আক্তার বলেন, আমাদের মতো করে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে। তবে নিহতের পরিবার ইচ্ছা করলে থানায় হত্যা মামলা করতে পারে।