রংপুরের বদরগঞ্জে কুতুবপুর উপস্বাস্থ্য উপস্বাস্থ্য কেন্দ্রটি দীর্ঘ সময় ধরে বন্ধ থাকায় প্রায় ২০ গ্রামের প্রায় ১৫ হাজার মানুষ বঞ্চিত চিকিৎসা সেবা থেকে চিকিৎসা দীর্ঘ দিন ধরে এই উপস্বাস্থ্য কেন্দ্রটির কক্ষের ভিতরে পোকা মাকড় আবাসিক হোটেল হিসেবে বেছে নিয়েছে। এলাকার মানুষের চিকিৎসা সেবা দেওয়ার জন্য কুতুবপুর ইউনিয়নের নাগের হাটে ৮০ দশকের দিকে এক একর ৩ শতাংশ জমির উপরে এই উপস্বাস্থ্য কেন্দ্রটি প্রতিষ্ঠা করা হয়।
শুরু থেকে চিকিৎসক না থাকলেও সেখানে স্বাস্থ্য সহকারীরা যতো টুকু সেবা দিয়েছেন তাতেই সন্তুষ্ট ছিলেন ওই এলাকার দুস্থ মানুষেরা।করোনা কালিন সময়ে উপস্বাস্থ্য কেন্দ্রে কর্মরত স্বাস্থ্য সহকারী একরামুল হক তার নিজ জেলা চাঁপাইনবাবগঞ্জ বদলি হয়ে যাওয়ার পর আর পুরণ হয়নি স্বাস্থ্য সহকারীর ওই শূন্য পদটি। ফলে দির্ঘ দিন ধরে সরকারী ভাবে স্বাস্থ্য সেবা থেকে বঞ্চিত কুতুবপুর সহ তিন ইউনিয়নের সাধারণ মানুষ গুলো।
কুতুবপুর ইউপির প্রাক্তণ ইউপি সদস্য কামরুজ্জামান বলেন অচল স্বাস্থ্য কেন্দ্রটি সচল করতে লিখিত ও মৌখিক ভাবে জনপ্রতিনিধি সহ সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন দপ্তরে আবেদন নিবেদন করেও কোন সাড়া মেলেনি কারোও।
ওই উপস্বাস্থ্য কেন্দ্রে কোয়াক ডাক্তার জাগো বন্ধু কয়েকদিন ওষুধ দিয়েছেন তাঁর সঙ্গে কথা বললে তিনি জানান, স্বাস্থ্য কেন্দ্রটি দীর্ঘদিন বন্ধ থাকার পর আমাকে ইউপি সদস্যর মাধ্যমে এ মাসে ওষুধ দিয়েছিল আমি ১০ টাকা করে নিয়ে ওষুধ দিয়েছি। এ মাসে আর ওষুধ দেবে না বলে জানিয়েছেন উপজেলা স্বাস্থ্য কেন্দ্র থেকে। আমি স্বাস্থ্য কেন্দ্রটি না খুললে বন্ধই থেকে যেত।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, এই উপ-স্বাস্থ্য কেন্দ্রে প্রতি দিন শতাধিক রোগী চিকিৎসা পেতেন। এটি বন্ধ হয়ে যাওয়ায় তাঁদের ২০ কিলোমিটার দূরে বদরগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে গিয়ে চিকিৎসা নিতে হচ্ছে। এতে অর্থের পাশাপাশি সময়ের অপচয় হচ্ছে।
কুতুবপুর নয়াপাড়া এলাকার শাহার বানু জানিয়েছেন উপ-স্বাস্থ্য কেন্দ্রটি বন্ধ হয়ে যাওয়ায় কোয়াক ডাক্তার এবং ঔষধ বিক্রেতাদের উপর নির্ভর করতে হচ্ছে। এতে করে স্বাস্থ্য সেবা ঝুঁকির মারাত্মক আকার ধারন করছে।
এলাকাবাসীর অভিযোগ করেন উপস্বাস্থ্য কেন্দ্রটি অচল হয়ে পড়ার পেছনে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকেই দায়ী করেছেন।
কুতুবপুর গাছুয়া পাড়া এলাকার আবু তাহের ও মামুনুর রহমান বলেন এই উপ-স্বাস্থ্য কেন্দ্র থেকে বদরগঞ্জ স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের দূরত্ব প্রায় ২০ কিলোমিটার।এ অঞ্চলের মানুষ অসুস্থ হয়ে পড়লে দীর্ঘ পথ পাড়ি দিয়ে রোগীদের যেতে হয় উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে। গত মঙ্গলবার সকাল সাড়ে ১০ টার দিকে সরে জমিনে গিয়ে দেখা যায় উপস্বাস্থ্য কেন্দ্রটির চারদিকে ঘিরে গরু ছাগল বাধা রয়েছে। একাধিক রশিতে ঝুলছে বাসা বাড়ির শাড়ি পেটিকোট বিছানার চাদর। একটু দূর থেকেই চোখে পড়তেই মনে হয় এটি উপস্বাস্থ্য কেন্দ্র না কি গোয়াল ঘর।
নয়াপাড়া এলাকার শাহাদাত হোসেন বাগান পাড়া এলাকার আফজাল হোসেন নাগের হাট কেন্দ্রীয় জামে মসজিদের মোয়াজ্জেম মোজাম্মেল হক সাহেব আলী ও কুতুব বাবা ফিলিং স্টেশনের মালিক বিএনপি নেতা বাবু উত্তম কুমার সাহা জানিয়েছেন ২০১৫ সালের দিকে উপ স্বাস্থ্য কেন্দ্রটি ১০ শয্যায় উন্নতি করণ ও বাউন্ডারি প্রাচীর নির্মাণের দাবীতে এলাকাবাসী ঘন্টা ব্যাপী মিঠাপুকুর ফুলবাড়ি এশিয়ান মহাসড়ক অবরোধ করে মানববন্ধন কর্মসূচি ও প্রতিবাদ সমাবেশ করেন। প্রতিবাদ সমাবেশ অংশ নিয়ে ছিলেন দশ গ্রামের নারী পুরুষ সহ শিশুরাও।
কুতুবপুর ইউনিয়নের ৯ নং ওয়ার্ডের সাবেক ইউপি সদস্য মুক্তারুল ইসলাম মন্ডল শ্রী মানিক রাম বলেন অনতিবিলম্বে স্বাস্থ্য কেন্দ্রটি চালু না করলে আবারো মহাসড়ক অবরোধ করার আল্টিম্যাটাম দিয়েছেন।
উপজেলা পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডাক্তার আশিকুর আরেফিন মুঠোফোনে জানান, কুতুবপুর ইউনিয়ন উপস্বাস্থ্য কেন্দ্রটি চালু করার জন্য আমি পরিদর্শনে গিয়ে ছিলাম। সেখানে ডাক্তার বসার মত কোনো পরিবেশ নাই। তবে আগামী মাস থেকে ওষুধ পাঠানো হবে।