নির্ধারিত সময়ের মধ্যেই লক্ষ্যমাত্রা অনুযায়ী ধান–চাল সংগ্রহ করা হবে আমন ধানের বাম্পার ফলন হলেও ন্যায্য মূল পাচ্ছেন না কৃষকরা। এমন অবস্থায় সরকারের নির্ধারিত মূল্যে ধান বিক্রি করে কিছু লাভের মুখ দেখতে সরকারি সংগ্রহের দিকে তাকিয়ে রয়েছেন তারা। তবে উৎপাদনের তুলনায় সংগ্রহের পরিমাণ কম থাকায় সবাই সরকারি মূল্যে বিক্রি নিয়ে রয়েছে অনিশ্চয়তা। তবে খাদ্য বিভাগ বলছে, ধান সংগ্রহ সরাসরি কৃষকদের কাছ থেকেই করা হবে।
জেলার গোয়াইনঘাট উপজেলায় কয়েকজন কৃষকদের কাছে জানতে চাইলে তারা জানান, এ বছর আমনের বাম্পার ফলন হয়েছে তা ঠিক। তবে আশানুরূপ দাম পাওয়া যাচ্ছে না। উৎপাদনব্যয় বেড়ে যাওয়ায় ঘামঝরানো পরিশ্রমের পর লাভ বলতে যা থাকে তা ‘নগণ্য’। মিল মালিক এবং মধ্যস্বত্বভোগীদের প্রভাবেই বাজারে সামগ্রিকভাবে দাম কম। ফলে ন্যায্যমূল্য থেকে তারা বঞ্চিত হচ্ছেন বলে জানান।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, সিলেটের বিভিন্ন বাজারে মণপ্রতি ধান বিক্রি করতে হচ্ছে ৯২০ থেকে ১ হাজার ১০০ টাকায়। অথচ উৎপাদন খরচ আগের তুলনায় অনেক বেশি। তা ছাড়া সময়মতো শ্রমিক ও পাওয়া যায় না। ফলে ফলন যতই ভালো হোক, বাজারদর কৃষকের কষ্টের সঠিক মূল্য দিচ্ছে না।
এদিকে সিলেট আঞ্চলিক খাদ্য নিয়ন্ত্রক কার্যালয়ের তথ্য অনুযায়ী, চলতি মৌসুমে চার জেলায় ৩ হাজার ৫৮ মেট্রিক টন বোরো ধান, ১৩ হাজার ৫১৮ মেট্রিক টন সিদ্ধ চাল এবং ২২ হাজার ২৮৬ মেট্রিক টন আতপ চাল কেনার লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। ইতোমধ্যে ৫৭৮ মেট্রিক টন ধান, ৩ হাজার ৬৮৯ মেট্রিক টন সিদ্ধ চাল এবং ২ হাজার ৬৬৩ মেট্রিক টন আতপ চাল সংগ্রহ করা হয়েছে। চার জেলা সংগ্রহের লক্ষ্যমাত্রা পৃথকভাবে নির্ধারণ করা হয়েছে-মৌলভীবাজারে ৭৯০ মেট্রিক টন ধান, ২ হাজার ৬৭১ মেট্রিক টন সিদ্ধ চাল এবং ৫ হাজার ৬৪৬ মেট্রিক টন আতপ চাল; হবিগঞ্জে ৪৯৭ মেট্রিক টন ধান, ৩ হাজার ৫২০ মেট্রিক টন সিদ্ধ চাল এবং ৩ হাজার ৮০৫ মেট্রিক টন আতপ চাল; সুনামগঞ্জে ৬২২ মেট্রিক টন ধান, ৩ হাজার ১২২ মেট্রিক টন সিদ্ধ চাল এবং ৭ হাজার ৩১৫ মেট্রিক টন আতপ চাল সংগ্রহের লক্ষ্য রয়েছে।
সিলেট জেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক মো. জাকারিয়া মুস্তফা বলেন, এ বছর জেলায় ১ হাজার ১৪৯ মেট্রিক টন ধান, ৪ হাজার ২০৫ মেট্রিক টন সিদ্ধ চাল এবং ৫ হাজার ৫২০ মেট্রিক টন আতপ চাল সংগ্রহ করা হবে। ধান সংগ্রহ করা হবে কেজিপ্রতি ৩৪ টাকা দরে, সিদ্ধ চাল ৫০ টাকা এবং আতপ চাল ৪৯ টাকা দরে। তিনি বলেন, প্রান্তিক কৃষকদের অগ্রাধিকার দিয়ে সরাসরি তাদের কাছ থেকে ধান সংগ্রহ নিশ্চিত করা হবে, যাতে মধ্যস্বত্বভোগীরা কোনো সুবিধা নিতে না পারে।
আঞ্চলিক খাদ্য নিয়ন্ত্রক এস এম সাইফুল ইসলাম বলেন, নির্ধারিত সময়ের মধ্যেই লক্ষ্যমাত্রা অনুযায়ী ধান–চাল সংগ্রহ সম্পন্ন করা হবে।