গ্রামীণ হেলথটেকের পৃষ্ঠপোষকতায় চট্টগ্রামের সীতাকুণ্ড উপজেলায় আনুষ্ঠানিকভাবে যাত্রা শুরু করেছে বাংলাদেশের প্রথম ডিজিটাল সোশ্যাল প্রেসক্রাইবিং ইকোসিস্টেম ‘সুখী গ্রাম’।
সোমবার (১৫ ডিসেম্বর) সীতাকুণ্ডে আয়োজিত এক অনুষ্ঠানের মাধ্যমে এই মানবিক ও উদ্ভাবনী স্বাস্থ্য উদ্যোগের শুভ উদ্বোধন করা হয়।
উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন আন্তর্জাতিক খ্যাতিসম্পন্ন সার্জন ডা. স্কট লেকম্যান। বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন উপজেলা সমাজসেবা কর্মকর্তা লুতফুন্নেসা বেগম, উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা বিভাগের প্রতিনিধি, গ্রামীণ হেলথটেক লিমিটেডের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা ডা. আহমেদ আরমান সিদ্দিকীসহ সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাবৃন্দ। অনুষ্ঠানের সহযোগী আয়োজক ছিল মানবিক সংস্থা মহসিন–ফাতেমা সিদ্দিকী সমাজকল্যাণ সংঘ।
‘সুখী গ্রাম’ উদ্যোগের আওতায় নির্বাচিত একটি গ্রামীণ কমিউনিটির প্রতিটি পরিবারকে ‘সুখী বাড়ি’ হিসেবে অন্তর্ভুক্ত করে ৩৬০ ডিগ্রি সমন্বিত স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিত করা হয়েছে। এই পাইলট প্রকল্পে প্রাথমিকভাবে ৫০টি পরিবার অন্তর্ভুক্ত করা হয়, যা বাস্তব জীবনে ‘সুখী ইকোসিস্টেম’-এর প্রথম সফল প্রয়োগ হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে।
এই উদ্যোগের মাধ্যমে ডিজিটাল প্রযুক্তি, কমিউনিটি-ভিত্তিক সেবা এবং অংশীদারিত্বের সমন্বয়ে প্রত্যন্ত অঞ্চলের মানুষের দোরগোড়ায় স্বাস্থ্যসেবা পৌঁছে দেওয়ার একটি কার্যকর মডেল উপস্থাপন করা হয়েছে। প্রতিটি পরিবারের হাতে তুলে দেওয়া হয় সুখী ফ্যামিলি হেলথ কার্ড, যার মাধ্যমে তারা নিয়মিত স্বাস্থ্যসেবা, রুটিন চেকআপ এবং ডিজিটাল হেলথকেয়ার সাপোর্ট গ্রহণ করতে পারবেন।
এছাড়া উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে ঘোষণা করা হয়, হেলথ কার্ডধারীরা আগামী তিন মাস বিনামূল্যে চিকিৎসকের ফলোআপ সেবা পাবেন, যা ‘সুখী অ্যাপ’-এর মাধ্যমে পরিচালিত হবে। পাশাপাশি সীতাকুণ্ড এলাকার অংশীদার ল্যাবগুলোতে স্বাস্থ্য পরীক্ষায় বিশেষ ছাড় সুবিধাও দেওয়া হবে, যা সাধারণ মানুষের চিকিৎসা ব্যয় উল্লেখযোগ্যভাবে কমাতে সহায়ক হবে।
অনুষ্ঠানে বক্তারা বলেন, ‘সুখী গ্রাম’ প্রমাণ করেছে—প্রযুক্তি, সহযোগিতা ও সহমর্মিতা একত্রিত হলে স্বাস্থ্যসেবা প্রতিটি ঘরে পৌঁছে দেওয়া সম্ভব। সুবিধাবঞ্চিত ও প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর জন্য স্বাস্থ্যসেবার যে প্রতিশ্রুতি ‘সুখী’ দিয়েছে, এই উদ্যোগ তারই বাস্তব প্রতিফলন।
আগামী দিনগুলোতেও প্রান্তিক মানুষের সুস্থ, নিরাপদ ও সচেতন ভবিষ্যৎ গড়তে এ ধরনের উদ্ভাবনী ও মানবিক কার্যক্রম অব্যাহত থাকবে বলে আয়োজকরা আশাবাদ ব্যক্ত করেন।