জগন্নাথ
বিশ্ববিদ্যালয়ের (জবি) শিক্ষার্থীদের ‘লং মার্চ টু
যমুনা’ কর্মসূচিতে পুলিশের লাঠিচার্জ, টিয়ারশেল ও সাউন্ড গ্রেনেড
নিক্ষেপে শিক্ষক, সাংবাদিক ও শিক্ষার্থীসহ শতাধিক
ব্যক্তি আহত হয়েছেন। হঠাৎ এই দমন-পীড়নে
আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীদের মধ্যে চরম ক্ষোভ ও উত্তেজনা ছড়িয়ে
পড়ে।
বুধবার (১৪
মে) সকাল ১১টায় বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাস থেকে যমুনার দিকে রওনা দেন কয়েকশ শিক্ষার্থী। পথে একাধিক পুলিশি ব্যারিকেড ভেঙে কাকরাইল মোড়ে পৌঁছালে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর বাধার মুখে পড়েন তারা। সেখানে পুলিশ ও শিক্ষার্থীদের মধ্যে
ইটপাটকেল ছোড়া ও ধাওয়া-পাল্টা
ধাওয়ার ঘটনা ঘটে। এক পর্যায়ে পুলিশ
সাউন্ড গ্রেনেড ও টিয়ারশেল নিক্ষেপ
করে এবং লাঠিচার্জ চালিয়ে শিক্ষার্থীদের ছত্রভঙ্গ করে দেয়।
আহত
শিক্ষার্থী ফয়সাল মুরাদ বলেন, আমরা শান্তিপূর্ণভাবে দাবি জানাতে বের হয়েছিলাম। কিন্তু বিনা উসকানিতে পুলিশ আমাদের ওপর হামলা চালিয়েছে। শিক্ষক, সাংবাদিক— কেউই রেহাই পাননি।
আহত
শিক্ষার্থী আনোয়ার ভূইয়া ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, এই পুলিশ কোন
সাহসে আমাদের উপর টিয়ারগ্যাস ও লাঠিচার্জ করে?
আমরা তো ন্যায্য দাবিতে
শান্তিপূর্ণভাবে পদযাত্রা করছিলাম। তারা হঠাৎ করেই আমাদের ওপর হামলা চালায়।
ঘটনার
সময় উপস্থিত সাংবাদিক মেহেদি হাসান জানান, আমি বারবার পরিচয় দেওয়ার পরও পুলিশ লাঠিচার্জ চালায়। এটি মতপ্রকাশ ও গণমাধ্যমের স্বাধীনতার
ওপর সরাসরি আঘাত।
আন্দোলনকারীরা
অভিযোগ করেন, প্রশাসনের নির্দেশেই পুলিশ শক্তি প্রয়োগ করেছে। তাদের দাবি, এই দমনমূলক পদক্ষেপের
দায় সম্পূর্ণ প্রশাসনকেই নিতে হবে।
বর্তমানে
যমুনা এলাকা উত্তপ্ত। আহতদের অনেকেই স্থানীয় হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। শিক্ষার্থীরা ঘোষণা দিয়েছেন, দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত
আন্দোলন চলবে।
শিক্ষার্থীদের
তিন দফা দাবি:
১.
আবাসন সংকট সমাধান না হওয়া পর্যন্ত
৭০% শিক্ষার্থীর জন্য ২০২৫-২৬ অর্থবছর থেকে
আবাসন বৃত্তি কার্যকর করা।
২.
প্রস্তাবিত পূর্ণাঙ্গ বাজেট কাঁটছাঁট না করে অনুমোদন।
৩.
দ্বিতীয় ক্যাম্পাসের কাজ পরবর্তী একনেক সভায় অনুমোদন ও অগ্রাধিকার প্রকল্পে
বাস্তবায়ন।
জানা
যায়, এর আগে সোমবার
বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে ছাত্র-শিক্ষক সমাবেশ এবং মঙ্গলবার ইউজিসির সঙ্গে বৈঠক হলেও শিক্ষার্থীরা দাবি পূরণে আশ্বস্ত হননি। সেখান থেকেই ‘লং মার্চ’ কর্মসূচির
সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।
শেষ
খবর পাওয়া পর্যন্ত, শিক্ষার্থীরা কাকরাইল মোড়ে রাস্তায় বসে রয়েছেন। তাদের সঙ্গে রয়েছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের কয়েকজন শিক্ষকও। আহতের সঠিক সংখ্যা এখনও নিশ্চিত হওয়া যায়নি।