জাতীয়
বিশ্ববিদ্যালয়ে চাকরিচ্যুত ৯৮৮ জন কর্মকর্তা-কর্মচারীকে
চাকরিতে পুনর্বহালের নির্দেশ দিয়েছে দেশের সর্বোচ্চ আদালত। মঙ্গলবার (২৭ মে) সকালে
প্রধান বিচারপতি ড. সৈয়দ রেফাত
আহমেদের নেতৃত্বাধীন আপিল বিভাগের পূর্ণাঙ্গ বেঞ্চ এই রায় দেন।
এর
আগে, এই মামলায় হেরে
গিয়েছিল জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়। তবে পরে রিভিউ গ্রহণ করে আপিল শুনানি অনুষ্ঠিত হয়, যার ফলেই আজ এই ঐতিহাসিক
রায় ঘোষণা করা হলো।
২০১১
সালে উচ্চ আদালতের এক নির্দেশে জাতীয়
বিশ্ববিদ্যালয়ের ৯৮৮ জন কর্মকর্তা-কর্মচারীকে
চাকরিচ্যুত করা হয়। দীর্ঘ সময় ধরে তারা মানবেতর জীবনযাপন করেছেন। অনেকে বিনা চিকিৎসায় মৃত্যুবরণ করেছেন, আর বাকিরা অবর্ণনীয়
কষ্টের মধ্যে দিন কাটিয়েছেন।
২০২৪
সালের ৫ আগস্ট ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে ক্ষমতাচ্যুত হয় আওয়ামী লীগ সরকার। এরপর চাকরিচ্যুত কর্মকর্তারা পুনর্বহালের দাবিতে আন্দোলনে নামেন। জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষও তাদের পাশে দাঁড়ায়। চলতি বছরের ৯ সেপ্টেম্বর জাতীয়
বিশ্ববিদ্যালয়ের সিন্ডিকেট সভায় ২০০৮ থেকে ২০২৪ সাল পর্যন্ত আওয়ামী সরকারের সময়ে ‘প্রতিহিংসার শিকার হয়ে চাকরিচ্যুত’ ৯৮৮ জনকে পুনর্বহালের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।
জানা
গেছে, ২০০৩ ও ২০০৪ সালে
যথাযথ নিয়মে বিভিন্ন স্মারকে এই কর্মকর্তাদের নিয়োগ
দেয়া হয়। কিন্তু প্রায় ৯ বছর পর
২০১১ সালে কিছু অসাধু কর্মকর্তা মিথ্যা ও ভিত্তিহীন তথ্য
আদালতে উপস্থাপন করে তাদের নিয়োগ অবৈধ ঘোষণা করান। এরপর বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষও সিন্ডিকেট সভায় চাকরিচ্যুতির সিদ্ধান্ত নেয়, যা অনেকেই মনে
করেন ছিল অনৈতিক ও নিয়মবহির্ভূত।
এই
ঘটনার সূচনা হয়েছিল ২০০৪ সালের ৩১ আগস্ট, সাবেক
সংসদ সদস্য অ্যাডভোকেট ফজলে রাব্বী মিয়া হাইকোর্টে একটি রিট দায়ের করার মাধ্যমে। তবে ২০০৬ সালের ২২ আগস্ট হাইকোর্ট
বেঞ্চ রিটটি খারিজ করে দেন। পরবর্তীতে গাজীপুর-১ আসনের সাবেক
এমপি অ্যাড. আ ক ম
মোজাম্মেল হক ২০১০ সালের
১৫ ডিসেম্বর সেই রায়ের বিরুদ্ধে রিভিউ মামলা করেন। এর পরিপ্রেক্ষিতে আদালত
ওই ৯৮৮ জনকে চাকরি থেকে অপসারণের রায় দেন।