× প্রচ্ছদ বাংলাদেশ বিশ্ব রাজনীতি খেলা বিনোদন বাণিজ্য লাইফ স্টাইল ভিডিও ঘটনাবহুল ২০২৪ সকল বিভাগ
ছবি ভিডিও লাইভ লেখক আর্কাইভ

বাংলাদেশি পর্যটকের অভাবে কলকাতার ব্যবসায়ীদের নতুন সিদ্ধান্ত

আন্তর্জাতিক ডেস্ক।

০৮ ডিসেম্বর ২০২৪, ১২:৫৬ পিএম

ছবিঃ সংগৃহীত।

বাংলাদেশ ও ভারতের দুই দেশের সম্পর্কে বর্তমানে চরম অস্থীতিশীল অবস্থা বিরাজমান রয়েছে। এতে ভারতীয় সরকারের পক্ষ থেকে বাংলাদেশিদের ভিসা সীমিত করা, বিভিন্ন হোটেলে বাংলাদেশিদের থাকতে নিষেধাজ্ঞা, ইত্যাদি সিদ্ধান্তের কারণে ভারতের ব্যবসায়ীদের মাথায় হাত। এসব সিদ্ধান্তের কারণে ধ্বস নেমেছে কলকাতার পর্যটন ব্যব্যসায়। প্রচুর বাংলাদেশি সেখানে নিত্যই কেনাকাটা থেকে শুরু করে ঘুরতে যেতেন। কিন্তু এখন বাংলাদেশি ক্রেতা এবং পর্যটকদের অভাবে মন্দা পরিস্থিতিতে কলকাতার ব্যবসায়ীরা নতুন ঘোষণা দিয়েছেন।

ত্রিপুরা যেখানে বাংলাদেশিদের বয়কটের সিদ্ধান্ত নেয় সেখানে কলকাতার ব্যবসায়ীরা বলছেন, বয়কট নয়, উপরন্তু বাংলাদেশিদের বাড়তি নিরাপত্তা দেবেন তারা । বিশেষ করে বাংলাদেশিদের নিরাপত্তা দেওয়ার ঘোষণা দিয়ে হোটেল, মানি এক্সচেঞ্জার ও পরিবহন সেক্টরের সঙ্গে যুক্ত ব্যবসায়ীরা বললেন, আমরা বাংলাদেশিদের বয়কট করব না, যতটা পারব তাদের নিরাপত্তা দেব।

গতকাল (৭ ডিসেম্বর) এক সংবাদ সম্মেলনে এ ঘোষণা দিয়ে কলকাতার নিউ মার্কেটের মার্কুইস স্ট্রিট-ফ্রি স্কুল স্ট্রিট ওয়েলফেয়ার সোসাইটি, নিউ মার্কেট ট্রেড অ্যাসোসিয়েশন, হোটেল ওনার্স অ্যাসোসিয়েশন নিজেদের অবস্থান স্পষ্ট করেছে।

বাংলাদেশি পর্যটকদের উদ্দেশ্য করে তারা বলেন, আমরা বাংলাদেশিদের বয়কট করব না, তারা নিশ্চিন্তে এখানে আসবেন। আমরা আমাদের সর্বোচ্চ ক্ষমতা দিয়ে তাদের নিরাপত্তা দেব।

মার্কুইস স্ট্রিট-ফ্রি স্কুল স্ট্রিট ওয়েলফেয়ার সোসাইটির সভাপতি মনতোষ সাহা বলেন, কয়েক বছর আগে বাংলাদেশ থেকে পর্যটকদের যে ঢল ছিল, সেটা এখন নেই। যার কারণে আমরা সবাই অর্থনৈতিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত। তেমনিভাবে বাংলাদেশিরাও ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন। তবে সবার আগে আমার দেশ। দুই দেশের সরকারকে নিজেদের মধ্যে বসে সুষ্ঠু সমাধান বের করার জন্য আহ্বান জানাই।

তিনি জানান, ডিসেম্বর থেকে সিজন শুরু হয়। প্রতিদিন পাঁচ থেকে সাত হাজার বাংলাদেশি নাগরিক কলকাতায় আসেন। কিন্তু বর্তমান পরিস্থিতিতে বাংলাদেশ থেকে আসা পর্যটকদের সংখ্যা শতাংশে নেমে এসেছে।

মার্কুইস স্ট্রিট-ফ্রি স্কুল স্ট্রিট ওয়েলফেয়ার সোসাইটির যুগ্ম সচিব মনতোষ সরকার জানান, নিউমার্কেট মূলত বাংলাদেশভিত্তিক অঞ্চল। বাংলাদেশি পর্যটকদের ওপর নির্ভর করে এখানকার মানি এক্সচেঞ্জ, হোটেল, পর্যটক ব্যবসা চলছে। তাই তাদের অনুপস্থিতি আমাদের এখানে প্রভাব ফেলছে। যদিও বাংলাদেশিদের আমরা বিদেশি পর্যটক হিসেবে দেখি না। তারা আমাদের ঘরের সদস্য। কিন্তু সাম্প্রতিক পরিস্থিতিতে বাংলাদেশের পর্যটকের সংখ্যা অনেক কম। আশা করি আগামী দিনে পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়ে যাবে।

তিনি আরো বলেন, সম্পর্ক নষ্ট করার জন্য কিছু গুজব ছড়াচ্ছে। সেদিকে কান না দিয়ে বাংলাদেশের পর্যটকদের জানাব তারা এখানে আসুক। কারণ, দুই দেশের মধ্যে খুব ভালো সম্পর্ক রয়েছে। দুই দেশেই ব্যবসায়ীরা রয়েছেন। আমাদের উভয়পক্ষকেই এই সমস্যার সমাধানের জন্য এগিয়ে আসতে হবে।

কলকাতার এমআরএল হোটেলের মালিক মনতোষ সরকার জানান, আমার হোটেলের ৮০ শতাংশ পর্যটক বাংলাদেশি, বাকি ২০ শতাংশ ভারতীয় পর্যটক। কিন্তু বর্তমান পরিস্থিতিতে ভারতীয় পর্যটনের সংখ্যা ৬০ শতাংশ। ডিসেম্বরেও বাংলাদেশের পর্যটক আসছেন কিন্তু সেই সংখ্যাটা খুবই কম। আমরা এটুকু বলতে চাই- বাংলাদেশিরা আসবেন, তাদের স্বাগত। তারা সেবা পান বলেই আমাদের এখানে আসেন। আমরাও আমাদের সাধ্যমতো তাদের পরিষেবা দেব।

এক্সপোর্ট ইমপোর্ট, বৈদেশিক মুদ্রা বিনিময়, পরিবহন ব্যবসায়ী মুহাম্মদ আলী হোসেইন শেখ জানান, আগস্টের পর থেকে আমার ব্যবসা ডুবতে বসেছে।

ভিসা প্রক্রিয়া শিথিল করার দাবি জানিয়ে আলী হোসেন জানান, বর্তমানে যে অবস্থা জারি রয়েছে, তাতে বাংলাদেশের চাহিদা মিটছে না। সেইসঙ্গে মাল্টিপল ভিসা, এমপ্লয়মেন্ট ভিসা চালু করার দাবি জানাই আমি। তিন মাসের জন্য এই ভিসা দেওয়া যেতে পারে। যদিও ভিসার বিষয়টি দুই দেশের অভ্যন্তরীণ ব্যাপার। ব্যবসাবান্ধব পরিস্থিতি ফিরিয়ে আনার জন্য ভারত সরকারের কাছেও আবেদন জানাই।

বাংলাদেশি পর্যটকদের নির্ভয়ে কলকাতায় আসার কথা জানিয়ে তিনি বলেন, কলকাতা আসা ভ্রমণের ক্ষেত্রে কোনো সমস্যা নেই।

গ্রীন লাইন পরিবহনের মালিক সঞ্জয় মজুমদার বলেন, কলকাতা নিউমার্কেটে প্রচুর হোটেল, দোকান রয়েছে। এর ওপর বহু মানুষের কর্মসংস্থান নির্ভর করে। কিন্তু বাংলাদেশি পর্যটক না থাকায় এখানে ব্যাপক প্রভাব পড়েছে। বর্তমান পরিস্থিতিতে বহু লোকের রুটি-রুজি কমে গেছে। এই অবস্থা দীর্ঘদিন চলতে থাকলে এখানকার অর্থনীতিতে বড়সড় প্রভাব পড়বে।

সৌহার্দ্য বাসের মালিক অবনী ঘোষ বাংলাদেশিদের নিয়ে অপপ্রচারের কারণে বিভিন্ন সোশ্যাল মিডিয়াকে দায়ী করে বলেন, কিছু কিছু খবরের কারণে দুই পাড়েই প্রভাব পড়ছে। ভারতের পররাষ্ট্র সচিব বিক্রম মিস্ত্রির আসন্ন বাংলাদেশ সফর নিয়ে আশা ব্যক্ত করে তিনি বলেন, এই শহরে দুদেশের যে জটিলতা সৃষ্টি হয়েছে তা ধীরে ধীরে কেটে যাবে। ভিসা প্রক্রিয়াতেও জটিলতা কমে যাবে বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেন তিনি।

 

Sangbad Sarabela

সম্পাদক ও প্রকাশক: কাজী আবু জাফর

যোগাযোগ: । [email protected] । বিজ্ঞাপন ও বার্তা সম্পাদক: 01894944220

ঠিকানা: বার্তা ও বাণিজ্যিক যোগাযোগ : বাড়ি নম্বর-২৩৪, খাইরুন্নেসা ম্যানশন, কাঁটাবন, নিউ এলিফ্যান্ট রোড, ঢাকা-১২০৫।

আমাদের সঙ্গে থাকুন

© 2024 Sangbad Sarabela All Rights Reserved.