দক্ষিণ গাজার রাফাহ শহরের পশ্চিমে আল-মাওয়াসি এলাকায় ত্রাণ সহায়তা নিতে জড়ো হওয়া ক্ষুধার্ত ও অনাহারি ফিলিস্তিনিদের ওপর এলোপাতাড়ি গুলিবর্ষণ করেছে ইসরাইলি বাহিনী। এতে অন্তত ৫০ জন নিহত এবং আরও ২০০ জনের বেশি আহত হয়েছে বলে জানিয়েছে গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়।
এই মর্মান্তিক ঘটনা ঘটেছে রোববার (১ জুন) ভোরে।
গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, এখনকার তথাকথিত ‘ত্রাণ কেন্দ্র’গুলো ইসরাইলি বাহিনীর মৃত্যুফাঁদে পরিণত হয়েছে। তারা ত্রাণ বিতরণের আড়ালে বেসামরিক মানুষের ওপর গণহত্যা চালানোর নতুন কৌশল নিয়েছে।
স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের মহাপরিচালক ডা. মুনির আল-বারশ আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের নীরব অবস্থানের তীব্র সমালোচনা করেছেন। তিনি জানান, গাজার হাসপাতালগুলো ওষুধ ও চিকিৎসা সরঞ্জামের মারাত্মক সংকটে রয়েছে, যা পরিস্থিতিকে আরও জটিল করে তুলছে।
এদিকে জাতিসংঘ এবং একাধিক আন্তর্জাতিক সংস্থার যৌথ প্রতিবেদনে জানানো হয়েছে, গাজায় চরম খাদ্য সংকট ও দুর্ভিক্ষের আশঙ্কা ভয়াবহ রূপ নিয়েছে। ২ মার্চ থেকে সকল ত্রাণ কার্যক্রম বন্ধ হয়ে যাওয়ার পর থেকে মানবিক বিপর্যয় আরও বেড়েছে। গত সপ্তাহেই অনাহারে ২৯ জন মারা গেছেন। পুরো গাজা অঞ্চলের (২৩ লাখ মানুষ) ১০০ শতাংশ এখন দুর্ভিক্ষের ঝুঁকিতে রয়েছে।
জাতিসংঘের মানবিক সংস্থা (OCHA)-এর মুখপাত্র জেন্স লারকে বলেন, গাজা বর্তমানে ‘পৃথিবীর সবচেয়ে ক্ষুধার্ত স্থান’-এ পরিণত হয়েছে।
ফিলিস্তিনি প্রতিরোধ গোষ্ঠী হামাস এই হত্যাকাণ্ডের তদন্তের জন্য জাতিসংঘের অধীনে একটি স্বাধীন আন্তর্জাতিক কমিশন গঠনের আহ্বান জানিয়েছে।
এছাড়া, আন্তর্জাতিক মানবিক সংস্থা ‘ডক্টরস উইদাউট বর্ডার্স’ সতর্ক করেছে যে, ইসরাইলি কর্তৃপক্ষ ত্রাণকে একটি রাজনৈতিক হাতিয়ারে পরিণত করে গাজার জনগণকে জোরপূর্বক বাস্তুচ্যুত করার পরিকল্পনা বাস্তবায়ন করছে।
সূত্রঃ মিডলইস্ট মনিটর।