অনাবৃষ্টি ও খরার কারণে জয়পুরহাটের পাঁচবিবিতে লিচুর ফলন বিপর্যয় দেখা দিয়েছে। চলতি লিচুর মৌসুমের শুরুতে উপজেলার বাগানগুলোতে প্রচুর পরিমানে লিচুর গুটি এসেছিল বলে জানান বাগান মালিকরা। কিন্তু তীব্র তাপদাহে লিচুর গুটি গুলো ঝড়ে পড়ে গেছে। এ কারণে বাগান মালিকরা ক্ষতি আশংকা করছেন।
উপজেলার বালিঘাটা ইউনিয়নের সুলতানপুর গ্রামের নির্মল রায়ের এক বিঘা জমিতে ৪৫ টি লিচুর গাছ রয়েছে। তিনি জানান, এবার গাছে প্রচুর পরিমাণে লিচু গুটি আসলেও একটিও লিচু আটকে নাই। সবই খরা আর অনাবৃষ্টির কারণে ঝড়ে পড়ে গেছে।
বাগজানা ইউনিয়নের কুটুহারা গ্রামের আমিরুল ইসলাম বেদারুল জানান, আমার তিনবিঘায় লিচু বাগান আছে। এখানে ৮০-৮৫ টা গাছ রয়েছে। পূর্বের বছরগুলোতে ৫০-৬০ হাজার টাকা পেয়ে থাকি এই বাগান থেকে। তবে এবার ফলন নেই বললেই চলে।
উপজেলার কাঁশপুর গ্রামের লিচু চাষী নিবারন, বরগাছা গ্রামের সফিকুল, বীরনগর গ্রামের আব্দুল হাকিম ও আঁটুল গ্রামের মিজানুর রহমান জানান, এবার অনাবৃষ্টির কারনে ফলন ব্যাপক পরিমানে কম হয়েছে। ফলে লিচুর ফলনে এবার লাভ হবে না। ও সকল লিচু চাষীরা ক্ষতি আশংকায় হতাশায় ভুগছেন।
কুটাহারা গ্রামের আমানুল্লাহ খান বলেন, আমার ১ বিঘা জমিতে লিচুর বাগান আছে, প্রতিবছর আমি নিজেই গাছ থেকে লিচু ভাঙ্গি এবং হাতে বিক্রয় করি, তাতে অনেক টাকা আমার রোজগার হয়। এবং বাড়ি ও আত্মীয়স্বজনের চাহিদাও মিটাই। বাগান প্রতিষ্ঠার পর থেকেই প্রতিবছর আমি আশানরূপ ভাবে ফলন পেয়েছি। কিন্তু এবার তীব্র তাপদাহ ও খরার ফলে লিচুর মুকুল এবং গুটি ঝরে পড়ে গেছে। এই কারলে লিচুর ফলন ব্যপক হারে হ্রাস পেয়েছে। যেসব বাগানে লিচুর ফুল দেরিতে বের হয়েছে সেগুলো কিছুটা বৃষ্টি পাওয়ায় সামান্য ফল হয়েছে। পার্শ্ববর্তী দিনাজপুর জেলাতেও একই অবস্থা, লিচুর ফলন নেই বললেই চলে। যেসকল বাগানে লিচু রয়েছে, বাজারে লিচুর মূল্য বেশি হওয়ায় অপরিপক্ক লিচুই বিক্রি করছেন বাগান মালিকরা। বর্তমানে চায়না-৩ সহ ভাল জাতের লিচু ৫০০ টাকা ও বম্বাই সহ অন্যান্য জাতের লিচুর ৩০০ টাকা প্রতি একশত পিচ হিসেবে বিক্রি হচ্ছে বাজারগুলোতে।
তবে পুরোদমে বাজারে লিচু আসলে দামটা কিছুটা কমে আসবে বলে মনে করছেন ব্যবসায়ীরা জানান।
উপজেলায় কৃষি সম্প্রসারণ অফিস সূত্রে জানা যায়, এবার উপজেলায় ২০/২৫ হেক্টর জমিতে লিচু বাগান রয়েছে। এছাড়াও নিজ পরিবারের চাহিদার কারণে প্রায় প্রতিটি বাড়িতেই লিচুর গাছ রয়েছে তবে, তীব্র তাপদাহের ফলে কোনো গাছে আশানুরুপ লিচু ধরেছে আবার ধরেনি।