ছবিঃ সংগৃহীত।
২০০৯ সালের ২৫ ফেব্রুয়ারি ঘটে যাওয়া ভয়াবহ পিলখানা হত্যাকান্ডের সঙ্গে জড়িতদের বিচারের দাবিতে শহীদ পরিবারের সদস্যরা ট্রাইব্যুনালে তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, তার নিরাপত্তা উপদেষ্টা তারিক সিদ্দিকিসহ ৫৭ জনের বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র জমা দিয়েছেন।
আজ (১৯ ডিসেম্বর)
আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে শহীদ পরিবারের পক্ষে অ্যাডভোকেট উদয় তাসমীর বিষয়টি
নিশ্চিত করেছেন।
এসময় উপস্থিত
ছিলেন, তৎকালীন বিডিআরের ডিজি মেজর জেনারেল শাকিল আহমেদের ছেলে ব্যারিস্টার রাকিন আহমেদ,
শহীদ কর্নেল মুজিবুর হকের স্ত্রী ফেরদৌসী, কর্নেল কুদরত এলাহীর ছেলে সাকিব রহমানসহ
১৫-২০ জন শহীদ পরিবারের সদস্যবৃন্দ।
পিলখানা গণহত্যায় শহীদ সেনা অফিসারদের ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারের সদস্যরা বলেন, শেখ হাসিনা ও তার দল আওয়ামী লীগ বাংলাদেশের জাতীয় ও রাষ্ট্রীয় স্বার্থবিরোধী রাজনৈতিক এজেন্ডা বাস্তবায়ন করেছে। সে লক্ষ্যে পরিকল্পিতভাবে সর্বপ্রথম বাংলাদেশের নিরাপত্তা ও প্রতিরক্ষা ব্যবস্থার দুই শক্তিশালী প্রতিষ্ঠান- বাংলাদেশ সেনাবাহিনী এবং বাংলাদেশ রাইফেলস (বিডিআর) ধ্বংসের নীলনকশা প্রণয়ন করে। সেই লক্ষ্য, উদ্দেশ্য ও কর্মসূচি বাস্তবায়নের জন্য সর্বপ্রথম শিকারে পরিণত হয় বাংলাদেশ রাইফেলসে তৎকালীন কর্মরত পেশাদার, সৎ-দক্ষ, মেধাবী ও দেশপ্রেমিক সেনাবাহিনীর অফিসারদের একটি অংশ। শেখ হাসিনা সেনাবাহিনীর উক্ত দেশপ্রেমিক সেনা অফিসারদেরকে নিজের স্বৈরশাসন পাকাপোক্ত করার লক্ষ্যে প্রথম ও প্রধানতম অন্তরায়-বিপত্তি হিসেবে চিহ্নিত করে উক্ত সেনা অফিসারদের এবং তাদের পরিবারের ওপর গণহত্যা ও মানবতাবিরোধী অপরাধের সংঘটন করার পরিকল্পনা গ্রহণ করার মাধ্যমে নিজের ক্ষমতাকে চিরস্থায়ী করার পরিকল্পনা গ্রহণ করেন।
তারা অভিযোগ করেন বলেন, সাবেক অবৈধ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও তারিক আহমেদ সিদ্দিকীর নেতৃত্ব, পরিকল্পনা ও নির্দেশনায় অন্যান্য আসামিরা আওয়ামী ফ্যাসিস্ট রাজনৈতিক এজেন্ডা বাস্তবায়নের লক্ষ্যে শেখ হাসিনার পরিকল্পনাধীন স্বৈরশাসন প্রতিষ্ঠার পথ সহজ ও চিরস্থায়ী করতে ২০০৯ সালে হত্যাকাণ্ড চালায়। তারা নিরস্ত্র সেনাবাহিনীর অফিসার এবং তাদের পরিবারের সদস্যদের চিরতরে নিশ্চিহ্ন করে দেওয়ার উদ্দেশ্যে তাদের উপর পরিকল্পিতভাবে পদ্ধতিগত উপায়ে নারকীয় হত্যাকাণ্ড চালায়। ভিকটিম সেনাবাহিনীর অফিসারদেরকে এবং তাদের পরিবার-পরিজনকে আটকাবস্থায় জিম্মি করে, কিছু মৃত সেনাবাহিনীর অফিসারদের লাশ পুড়িয়ে দিয়ে, লুটপাট চালিয়ে এবং শারীরিক-মানসিকভাবে আঘাত ও লাঞ্ছিত করে গণহত্যা ও মানবতাবিরোধী অপরাধ সংঘটন করে।
তারা বলেন, এই ঘটনায় সর্বমোট ৭৪ জন প্রাণ হারায়। শেখ হাসিনা এই গণহত্যাকে অন্যান্য নিরাপত্তা বাহিনীসহ সব দেশপ্রেমিক জনগণকে কড়া বার্তা দেওয়ার জন্য মাধ্যম হিসেবে গ্রহণ করে। এই মানবতাবিরোধী ও গণহত্যার মাধ্যমে পুরো সেনাবাহিনী ও রাজনৈতিক নেতাকর্মী, জনপ্রতিনিধিসহ বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষ শেখ হাসিনা ও ফ্যাসিস্ট আওয়ামী লীগের মতাদর্শ বাস্তবায়ন, লুটপাট, রাষ্ট্রবিরোধী ও সন্ত্রাসীমূলক কর্মকাণ্ডের কোন রকম প্রতিবাদ করার সাহস ও শক্তি হারিয়ে ফেলে।
এসময় পিলখানা গণহত্যার তদন্ত ও বিচার সুষ্ঠুভাবে এগিয়ে নেওয়ার দাবি জানিয়ে ব্যারিস্টার রাকিন আহমেদ বলেন, আমাদের দেশপ্রেমিক ছাত্র-জনতার আত্মত্যাগের মাধ্যমে আমরা নতুন করে স্বাধীনতা পেয়েছি। সরকারের প্রতি আমাদের আকুল আবেদন পিলখানা গণহত্যার তদন্ত ও বিচার সুষ্ঠুভাবে এগিয়ে নিয়ে আমাদের পাশে দাঁড়াবেন। এবং বিগত ফ্যাসিস্ট আমলে দায়ের করা পিলখানা হত্যাকাণ্ডের মামলায় ষড়যন্ত্রমূলকভাবে যে সব নিরীহ, নিরপরাধ ও নির্দোষ বিডিআর জওয়ানদেরকে বছরের পর বছর কারাগারে আটক রাখা হয়েছে তাদেরকে মুক্তি দেবেন।
একইসঙ্গে শহীদ পরিবারের সদস্যরা ২৪-এর জুলাই আন্দোলনসহ বিগত ফ্যাসিস্ট বিরোধী আন্দোলনে অবৈধ প্রধানমন্ত্রী ফ্যাসিস্ট শেখ হাসিনা এবং তার দোসর সংঘটিত গণহত্যা ও মানবতাবিরোধী অপরাধের শিকার হওয়া সব শহীদ, আহত-পঙ্গু ও গুম হওয়া ব্যক্তিদের প্রতি ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠা, তাদেরকে ক্ষতিপূরণ প্রদান এবং অপরাধীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবিও জানান তারা।
সম্পাদক ও প্রকাশক: কাজী আবু জাফর
যোগাযোগ: । [email protected] । বিজ্ঞাপন ও বার্তা সম্পাদক: 01894944220
ঠিকানা: বার্তা ও বাণিজ্যিক যোগাযোগ : বাড়ি নম্বর-২৩৪, খাইরুন্নেসা ম্যানশন, কাঁটাবন, নিউ এলিফ্যান্ট রোড, ঢাকা-১২০৫।
© 2024 Sangbad Sarabela All Rights Reserved. Design & Developed By Root Soft Bangladesh