আজ ২৫ ডিসেম্বর
খ্রিস্ট ধর্মালম্বীদের সবচেয়ে বড় ধর্মীয় অনুষ্ঠান বড়দিন। যিশুখ্রিষ্ট্রের জন্মদিনে
প্রত্যেক বছর ২৫ ডিসেম্বর বিশ্বজুড়ে বড়দিন উদযাপন করা হয়। তবে ক্রিসমাস ডে
কে বড়দিন বলার পেছনে কারণটা কি জানেন? না জানলে চলুন জেনে আসা যাক।
খ্রিষ্টধর্ম
মতে, যিশুখ্রিষ্টের জীবনের পাঁচটি ঘটনা রয়েছে জন্ম, মৃত্যু, পুনরুত্থান, স্বর্গে আরোহণ
এবং পুনরাগমন। ২৫শে ডিসেম্বর যিশু খ্রিস্টের জন্মের দিনে বড়দিন উৎসবটি পালিত হয়। যিশু
খ্রিস্টের জন্ম বেথলেহেম নগরীতে। অলৌকিকভাবে জন্মগ্রহণ করেছিলেন তিনি। খ্রিস্টান সম্প্রদায়ের
মানুষ বিশ্বাস করে, যিশু খ্রিষ্ট মানুষের রূপ ধরে পৃথিবীতে এসেছিলেন সব পাপ থেকে মুক্তি
দিতে আর মানবিক বন্ধনকে আরও সুদৃঢ় করতে। এজন্য তার জন্মদিন স্মরণ করা হয় শ্রদ্ধা ও
ভালোবাসায়।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের
বাংলা বিভাগের অধ্যাপক ড: বিশ্বজিৎ ঘোষ এক প্রতিবেদনে জানিয়েছেন, যিশু খ্রিষ্টের জন্মদিন
মর্যাদার দিক থেকে এটি একটি বড় দিন। কারণ বিশ্বের বিশাল অংশের মানুষ তার দেওয়া ধর্ম
ও দর্শনের অনুসারী।
যিশুর জন্মদিন
কেউ জানে না। বাইবেলে যীশুখ্রিষ্টের জন্মের নির্দিষ্ট কোনও তারিখ দেওয়া নেই। কিন্তু
৩৩৬ সাল নাগাদ থেকে এটি যিশুর জন্মদিন হিসাবেই নথিভুক্ত করেন রোমানরা। তারপর থেকেই
এ দিনে পালিত হয় ক্রিসমাস। বেথেলেহেম শহরের এক আস্তাবলে পিতা জোসেফ ও কুমারী মাতা মেরির
কোল আলো করো জন্ম নেন যিশুখ্রিষ্ট। ‘এই দিন থেকে ঠিক ৯ মাস আগে যিশুকে গর্ভে ধরেন মাতা
মেরি।’ এমন মনে করেই এই দিনকেই ক্রিসমাস হিসাবে স্বিকৃতি দেওয়া
হয়।
খ্রীষ্টধর্মীয়রা
ধুমধাম করে উদযাপন করেন এদিন। তবে শুধু খ্রিষ্টানরা বললে ভুলই হবে, ক্রিসমাস নিয়ে কম উৎসাহ নেই
অন্যান্য ধর্মের মানুষদেরও। রঙ-বেরঙের কেক,
চকোলেট, আলো দিয়ে আনন্দের সঙ্গে বড়দিন পালন করেন আট থেকে আশি।
এবার আসা যাক কেন এদিন ‘বড়দিন’ তার তাৎপর্য।
এদিন
সবচেয়ে দেরিতে সূর্য ডোবে বলে একে ‘বড়দিন' বলা হয় না। শীতের
অন্যান্য দিনের মতোই স্বাভাবিক হারে প্রাকৃতিক নিয়মেই সূর্য ডোবে এদিন। ‘বড়দিন' বলতে বিশেষ দিন বা ইংরেজিতে বলেতে
গেলে ‘দি গ্রেট ডে'।
'লঙ
ডে' নয় বরং ‘গ্রেট
ডে' হিসাবেই ২৫ ডিসেম্বরকে বড়দিন
বলা হয়। যিশুর জন্মদিনটা খ্রীষ্টধর্মীয়দের কাছে শ্রেষ্ঠ দিন হিসাবে বিবেচিত তাই এদিনকে বাংলায় বড়দিন বলা হয়।
তবে কেন ক্রিসমাসকে
‘বড়দিন’ বলা হয়? ইতিহাস ঘাঁটলে জানা যায়, ইংরেজ শাসনকালে ব্রিটিশরা
এইদিনকে বিশেষ বোঝানোর জন্য একে ‘বড়া দিন’ বলতো। বাঙ্গালিরাও যাতে এই দিনকে গুরুত্ব
দেয় এবং বিশেষ দিন হিসাবে ধরে তাই বাংলা ভাষাতেই এই উৎসবকে ‘বড়া দিন’
বলতেন ইংরেজরা। সেই বড়া দিনই বদলে গিয়েছে বড়দিন-এ। তাই সূর্য ডোবার নিরিখে নয়, গুরুত্বের
নিরিখেই এদিনকে বড়দিন বলেন আবালবৃদ্ধবনিতারা।