× প্রচ্ছদ বাংলাদেশ বিশ্ব রাজনীতি খেলা বিনোদন বাণিজ্য লাইফ স্টাইল ভিডিও ঘটনাবহুল ২০২৪ সকল বিভাগ
ছবি ভিডিও লাইভ লেখক আর্কাইভ

গণতান্ত্রিক ব্যবস্থায় যাওয়ার জন্য নির্বাচন হচ্ছে প্রধান ফটক- মির্জা ফখরুল

নিজস্ব প্রতিবেদক 

২৭ ডিসেম্বর ২০২৪, ১৮:১৮ পিএম

ছবিঃ সংগৃহীত।

গণতান্ত্রিক ব্যবস্থায় যাওয়ার জন্য নির্বাচনকে প্রধান ফটক হিসেবে উল্লেখ করে বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, ‘প্রয়োজনীয় সংস্কার দ্রুত করে একটা সুস্থ ও নিরপেক্ষ নির্বাচনে যেতে চাই আমরা।’

আজ (২৭ ডিসেম্বর) রাজধানীর খামার বাড়ি কৃষি ইনস্টিটিউট মিলনায়তনে ‘ফোরাম ফর বাংলাদেশ স্টাডিজ’ আয়োজিত ‘ঐক্য, সংস্কার, নির্বাচন, জাতীয় সংলাপ ২০২৪’ শীর্ষক আলোচনা সভায় প্রধান আলোচকের বক্তব্যে এসব কথা বলেন তিনি।

মির্জা ফখরুল বলেন, ‘সংস্কারের ব্যাপারে আমরা অত্যন্ত আন্তরিক। আমরা ২০১৬ সালে আমাদের চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া ভিশন টুয়েন্টি-থার্টি একটা সংস্কার প্রস্তাব করেছিলাম। যে বিষয়গুলো পরিবর্তন আনা দরকার সেগুলো নিয়ে প্রস্তাবে এনেছিলাম। সে বিষয় থেকেই আজকের সামনে এসেছে প্রধানমন্ত্রী ও ক্ষমতার ভারসাম্য, একই ব্যক্তি যেন দুইবারের বেশি প্রধানমন্ত্রী না হতে পারেন। সে বিষয়টা নিশ্চিত করা। একইসাথে দ্বিকক্ষ বিশিষ্ট পার্লামেন্ট- এ বিষয়টি তখনই আমরা তুলে ধরেছি।’

‘আমরা ২০২২ সালে একটি জনসমাবেশের মধ্য দিয়ে ১০ দফা দাবি পেশ করি। পরবর্তী সময়ে সকল রাজনৈতিক দলের সাথে একমত হয়ে ও আলোচনা করে আমরা ৩১ দফা সংস্কার প্রস্তাব করি,’ এমন কথা জানান তিনি।

তিনি বলেন, ‘সংস্কারের পক্ষে আমরা প্রথম থেকেই। তবে দুর্ভাগ্য আমাদের কিছু কিছু বক্তৃতা এসেছে বিএনপির সংস্কার চায় না, এ কথাটি সঠিক নয়। প্রয়োজনীয় সংস্কার দ্রুত করে একটা সুস্থ ও নিরপেক্ষ নির্বাচনে যেতে চাই আমরা। আমরা নির্বাচনের কথা বলছি কেন? গণতান্ত্রিক ব্যবস্থায় যাওয়ার জন্য নির্বাচন হচ্ছে প্রধান ফটক, দরজা। আর এটাই ডেমোক্রেসি।’

মির্জা ফখরুল বলেন, ‘বাংলাদেশ এখন একটা জটিল রাজনৈতিক সময়ের মধ্যে দিয়ে যাচ্ছে। এখন আমাদেরকে যে কাজটি করতে হবে তা হলো, অবশ্যই বাংলাদেশকে আমরা যেন স্বপ্নের মতো করে গড়তে পারি।’

তিনি বলেন, ‘৫৩ বছর পর সংস্কার নির্বাচন নিয়ে আমাদের আলোচনা করতে হচ্ছে। ভালো হতো আমরা যদি এ বিষয়গুলো নিয়ে একসাথে কাজ করতে পারতাম। এ বিষয়গুলো নিয়ে কাজ করে একটা জায়গায় পৌঁছাতে পারতাম।’

বিএনপি মহাসচিব বলেন, ‘আমি এবং আমার দল ২০১২ সাল থেকে এই ফ্যাসিবাদের বিরুদ্ধে লড়াই-সংগ্রাম শুরু করেছি। তাদের বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়েছি। সেই সময়ে অনেক রাজনৈতিক নেতাকে হত্যা করা হয়েছে গুম করা হয়েছে, কারাগারে নেয়া হয়েছে। আমার দলের ৬০ লাখ নেতাকর্মীর বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলা হয়েছে। আমাদের ৭০০’র বেশি নেতাকর্মীকে গুম করে দেয়া হয়েছে। ২০ হাজারও বেশি মানুষকে হত্যা করা হয়েছে। আয়নাঘরের কথা আপনারা সবাই জানেন। ফাঁসি দেয়া হয়েছে বিশিষ্ট রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দকে। এরপরও আমরা কিন্তু থেমে থাকিনি। আজকে যে সোচ্চার এটি আমরা প্রথম থেকেই ছিলাম। তখন আমরা অনেককেই আমাদের সাথে পাইনি, এখন তাদের দেখছি, ভালো লাগছে! আমরা আরো অনুপ্রাণিত হচ্ছি।’

মির্জা ফখরুল বলেন, ‘আমাদের প্রধান সমস্যা- এদেশে গণতান্ত্রিক চর্চা হয়নি। এখানে সে সংস্কৃতি গড়ে ওঠেনি। সেই কালচার না থাকায় আমাদেরকে বারবার বলতে হচ্ছে, এ করতে হবে, ও করতে হবে। এটা ডেমোক্রেসি, এটা এভাবে যেতে হবে। ডেমোক্রেসি কিন্তু বারবার চর্চা প্র্যাকটিস ছাড়া গড়ে উঠবে না। হুট করে কোনোকিছু করা সম্ভব হবে না।’

উদাহরণ হিসেবে মির্জা ফখরুল বলেন, ‘কেয়ারটেকার সরকারের অধীনে তিনটি নির্বাচন হয়েছে, সে তিনটি নির্বাচনী গ্রহণযোগ্য হয়েছে, সেটি মানুষ গ্রহণ করেছে।’

তিনি বলেন, ‘আমি কোনো রাজনৈতিক তাত্ত্বিক বা বিশেষজ্ঞ নই। আমি মাঠ থেকে রাজনীতি শুরু করেছি। আমি পৌরসভার চেয়ারম্যান থেকে এখানে এসেছি, তৃণমূল থেকে কাজ করেই এ পর্যায়ে এসেছি।’

তিনি আরো বলেন, ‘জনগণকে বাদ দিয়ে কোনোকিছু করা সম্ভব হবে না। জনগণকে তৈরি করতে হবে আপনাকে (সকলের উদ্দেশ্যে)। এখানে যারা আছেন, তারা জনগণের সাথে নিবিড় সম্পর্ক করার চেষ্টা করবেন।’

সংবিধান সংস্কার কমিটির প্রধান ডক্টর আলী রিয়াজের বক্তব্য তুলে ধরে বিএনপি মহাসচিব বলেন, ‘রিয়াজ বলেছেন তার কাছে এক লাখেরও বেশি প্রস্তাব এসেছে। শুনেছি, এ প্রস্তাবগুলো তৈরি করে তারা সরকারের হাতে তুলে দিবেন, সরকার তারপর রাজনৈতিক দলগুলোর সাথে বসবেন। উনারাই (রীয়াজরা) যদি প্রথম পলিটিক্যাল পার্টিগুলোর সাথে বসতেন, সেটা আরো ভালো হতো। আমার কাছে মনে হয়। তারা (রীয়াজরা) গভমেন্টের সাথে বসবেন, আরো আলোচনা হবে। আমার কাছে মনে হয়, যত সময় বাড়বে, তত আমাদের সমস্যা বাড়বে। আসল প্রবলেম তো অন্য জায়গায়। এগুলো বাস্তবায়ন করবেন কাদের দিয়ে? প্রশাসন, গভমেন্ট মেশিনারি, এগুলো তো এখনো ফ্যাসিবাদের মধ্যে আছে। এতটুকুও পরিবর্তন হয়নি। একটা ফাইলও নড়ে না। আহত শিক্ষার্থীদের চিকিৎসার ফাইল কোথায় আটকে আছে দেখবেন? ওখানেই আটকে আছে। এই বিষয়গুলোর বিরুদ্ধে আমাদের কে লড়তে হবে।’

মাইন্ড সেট একটা বড় জিনিস এমন মন্তব্য করে তিনি প্রধান উপদেষ্টা ডক্টর মোহাম্মদ ইউনুসের প্রসঙ্গ তুলে ধরে বলেন, ‘উনি একটা বক্তব্য দিয়েছেন খুব ভালো লেগেছে যে একটা বন্দোবস্ত তো ছিল, টাকা দিব কাজ করিয়ে নেব। ভালো, সমস্যা নেই। এখন তো আপনি অন্য সিস্টেমে যাচ্ছেন। সেই মাইন্ড সেটটা তো তৈরি করতে হবে। ওই মাইন্ড সেটের মধ্য দিয়ে গণতন্ত্র চর্চা করতে হবে। ভুল হবে, ত্রুটি হবে কিন্তু ওর মধ্যে দিয়েই ডেমোক্রেটিক সিস্টেমকে এগিয়ে নিতে হবে। সামনের দিকে নিয়ে যেতে হবে।’

একাত্তরকে ভুলে না যাওয়ার আহ্বান জানিয়ে বিএনপি মহাসচিব বলেন, ‘১৯৭১ সালকে আমরা যেন কখনো ভুলে না যাই। আমাদের ধারাবাহিক গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠার যে সংগ্রাম-লড়াই, একাত্তরের পর থেকে সেই লড়াই-সংগ্রাম প্রত্যেকে আমাদের মনে রাখা দরকার। সে লড়াই-সংগ্রাম ও ছাত্রদের আত্মত্যাগের মধ্য দিয়ে আজকে আমরা এই জায়গায় এসে পৌঁছেছি।’

মির্জা ফখরুল বলেন, ‘আমাদের দলের পক্ষ থেকে আমরা সবসময় গণতন্ত্র ও সংস্কারের পক্ষে। এর জন্য আমরা কাজ করব, করেছি, ভবিষ্যতেও করব। একইসাথে আমরা মনে করি, জনগণকে বাদ দিয়ে কোনো কিছু করা যাবে না, ওপর থেকে চাপিয়ে দিয়ে কোনোকিছু করা যাবে না। সকলকে সাথে নিয়েই সে কাজগুলো আমরা করবো এমন প্রত্যয় ব্যক্ত করেন তিনি।’


Sangbad Sarabela

সম্পাদক ও প্রকাশক: কাজী আবু জাফর

যোগাযোগ: । [email protected] । বিজ্ঞাপন ও বার্তা সম্পাদক: 01894944220

ঠিকানা: বার্তা ও বাণিজ্যিক যোগাযোগ : বাড়ি নম্বর-২৩৪, খাইরুন্নেসা ম্যানশন, কাঁটাবন, নিউ এলিফ্যান্ট রোড, ঢাকা-১২০৫।

আমাদের সঙ্গে থাকুন

© 2024 Sangbad Sarabela All Rights Reserved.