মানবতাবিরোধী
অপরাধের মামলায় মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত জামায়াত নেতা এটিএম আজহারুল ইসলাম আপিল বিভাগ থেকে সব অভিযোগ থেকে
খালাস পেয়েছেন। মঙ্গলবার (২৭ মে) সকাল
৯টা ৫২ মিনিটে প্রধান
বিচারপতি সৈয়দ রেফাত আহমেদের নেতৃত্বাধীন সাত সদস্যের আপিল বেঞ্চ সর্বসম্মতিক্রমে এ রায় ঘোষণা
করেন। রায় শুনে কারাগারের তত্ত্বাবধানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তিনি আল্লাহর শুকরিয়া আদায় করেন এবং আনন্দের বহিঃপ্রকাশ হিসেবে বিজয় চিহ্ন দেখিয়ে ছবি তোলেন। এ সময় তাকে
মিষ্টিমুখ করানো হয়।
এটিএম
আজহারের আইনজীবীরা জানিয়েছেন, এই রায়ের ফলে
তার মুক্তিতে আর কোনো আইনি
বাধা নেই। আইনজীবী শিশির মনির বলেন, “এই রায়ের জন্য
প্রথমে আল্লাহর শুকরিয়া আদায় করি। তাকে সকল অভিযোগ থেকে বেকসুর খালাস দেওয়া হয়েছে। এটি ছিল বিচারের নামে অবিচার। এই রায়ের মাধ্যমে
সত্যের জয় হয়েছে, মিথ্যা
পরাজিত হয়েছে।” তিনি আরও বলেন, “আজহারের বিরুদ্ধে যে প্রক্রিয়ায় মামলা
পরিচালিত হয়েছে, তা ছিল পৃথিবীর
ইতিহাসে নজিরবিহীন।”
একাত্তরের
মুক্তিযুদ্ধ চলাকালে রংপুর অঞ্চলে গণহত্যা, অপহরণ, ধর্ষণ, আটক, নির্যাতন, অগ্নিসংযোগসহ ৯ ধরনের ৬টি
মানবতাবিরোধী অপরাধের অভিযোগ আনা হয় এটিএম আজহারের
বিরুদ্ধে। ২০১৪ সালের ৩০ ডিসেম্বর আন্তর্জাতিক
অপরাধ ট্রাইব্যুনাল তাকে ২, ৩ ও
৪ নম্বর অভিযোগে মৃত্যুদণ্ড দেন। পাশাপাশি ৫ নম্বর অভিযোগে
২৫ বছর এবং ৬ নম্বর অভিযোগে
৫ বছরের কারাদণ্ড দেওয়া হয়।
এরপর
তিনি আপিল করলে ২০১৯ সালের ৩১ অক্টোবর তৎকালীন
প্রধান বিচারপতি সৈয়দ মাহমুদ হোসেনের নেতৃত্বাধীন আপিল বেঞ্চ সংখ্যাগরিষ্ঠ মতের ভিত্তিতে মৃত্যুদণ্ড বহাল রাখেন। ওই রায়ে ২,
৩, ৪ ও ৬
নম্বর অভিযোগের দণ্ড বহাল থাকলেও ৫ নম্বর অভিযোগ
থেকে তাকে খালাস দেওয়া হয়।
২০২০
সালের ১৫ মার্চ আপিল
বিভাগের রায়ের পূর্ণাঙ্গ অনুলিপি প্রকাশিত হয়। একই বছরের ১৯ জুলাই এটিএম
আজহার রায়ের পুনর্বিবেচনার (রিভিউ) আবেদন করেন, যেখানে তিনি মোট ১৪টি যুক্তি তুলে ধরেন। সেই আবেদনের শুনানি শেষে ২০২৪ সালের ২৬ ফেব্রুয়ারি আপিল
বিভাগ তাকে পূর্ণাঙ্গ আপিলের অনুমতি দেয়। এরপর চূড়ান্ত শুনানি শেষে আদালত মঙ্গলবার রায় ঘোষণা করে তাকে সব অভিযোগ থেকে
অব্যাহতি দেয়।