ছবিঃ সংগৃহীত।
অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে চতুর্থ টেস্টের প্রথম দিন ১৯ বছর বয়সী অভিষিক্ত স্যাম কোনস্টাসের সঙ্গে অশোভন আচরণ করেন কোহলি। ধাক্কাধাক্কির ঘটনায় বক্সিং ডে টেস্টের প্রথম দিনে কোহলি পেয়েছেন শাস্তি। কোহলিকে মেলবোর্ন টেস্টে জরিমানা দিতে হবে বাংলাদেশি মুদ্রায় ৪ লাখ ২০ হাজার টাকা। এতে সাবেক ক্রিকেটার ও ক্রিকেট লেজেন্ডরা বেজায় চটেছেন।
বৃহস্পতিবার (২৬ ডিসেম্বর) দিনের খেলা শেষে কোহলিকে আচরণবিধির লেভেল ওয়ান পর্যায়ের অপরাধের জন্য একটি ডিমেরিট পয়েন্ট যোগ করা হয়। এতে ম্যাচ ফির ২০ শতাংশ অর্থ জরিমানা করে আইসিসি।
সাবেক ক্রিকেটার মার্ক ওয়াহর মতে, আপনি যে–ই হন, এমন আচরণের কোনো জায়গা নেই। সে খুব খুব ভাগ্যবান, শাস্তিটা একদমই কম হয়েছে...খুব সহজেই সে লেভেল টু পর্যায়ের অপরাধে দোষী সাব্যস্ত হতে পারত। আর্থিক জরিমানাই যদি করা হবে, সেটা ম্যাচ ফির ৭৫ শতাংশ অর্থ হতে পারত। কোনো অবস্থাতেই শারীরিক সংঘর্ষ হতে পারে না। এর জায়গা নেই।
এই যুগে আর্থিক জরিমানা খেলোয়াড়দের ওপর কোনো প্রভাব ফেলবে না বলেও মনে করেন সাবেক এই ইংল্যান্ড অধিনায়ক। অ্যাডাম গিলক্রিস্টের প্রশ্নও আর্থিক জরিমানা নিয়েই। বাজে ও প্রশ্নবিদ্ধ আচরণ থামাতে কোহলির মতো মিলিয়নিয়ার ক্রিকেটারকে আর্থিক জরিমানা ঠিক কতটা কার্যকর—প্রশ্ন গিলক্রিস্টের।
অস্ট্রেলিয়ার সাবেক অধিনায়ক রিকি পন্টিংয়ের মতে, শাস্তিটা কড়া হয়নি। চ্যানেল সেভেনকে বলেছেন, ‘ব্যক্তিগতভাবে আমার মনে হয় না শাস্তিটি কড়া হয়েছে। আগেও এমন ঘটনা ঘটেছে এবং সাধারণত ১৫–২৫ শতাংশ অর্থ জরিমানা করা হয়েছে। সারা দুনিয়া মিলিয়ে বছরের এ দিনটিতেই সবচেয়ে বেশি লোক ক্রিকেট দেখেছে। ভাবুন তো, গ্রেড ম্যাচে এমন কিছু ঘটলে কি হতো? আমার মনে হয় লোকে এখন ভাববে, ব্যাপারটা আর তেমন কিছুই না।’
ফক্স ক্রিকেটে মেলবোর্ন টেস্টের ধারাভাষ্য দেওয়া ভন এই শাস্তি নিয়ে বলেছেন, ‘আমার মতে, বিরাট খুব ভাগ্যবান। যে বিরোধটা হয়েছে, সেটি ব্যক্তি হিসেবে তার জন্য মোটেও ভালো ছিল না। অ্যাডিলেড ওভালে মোহাম্মদ সিরাজ যে শাস্তি পেয়েছে, তাকেও একই শাস্তি দেওয়া হয়েছে। তাই আমার মতে, সে আসলে ছাড় পেয়ে গেল।’ অ্যাডিলেড টেস্টে অস্ট্রেলিয়ান ব্যাটসম্যান ট্রাভিস হেডের সঙ্গে মাঠে উত্তপ্ত বাক্যবিনিময়ের জন্য সিরাজকে একটি ডিমেরিট পয়েন্টসহ তার ম্যাচ ফির ২০ শতাংশ অর্থ জরিমানা করেছিল আইসিসি।
ভারতের সাবেক ক্রিকেটার, কোচ ও ধারাভাষ্যকার রবি শাস্ত্রীও মনে করেন, কোহলি বেঁচে গেছেন বড় শাস্তি থেকে, ‘বিরাট যখন এই ঘটনাটা পেছন ফিরে দেখবে, সে ভাববে, যে শাস্তিটা পেয়েছে, সে জন্য সে ভাগ্যবান...মাঠে যে ঘটনা সবার শেষে দেখতে চাই, সেটা হলো শারীরিক সংঘর্ষ। এটা কেউ চায় না। এটা খেলা। কেউ এই সীমানাটা পেরোয় না...প্রায় দেড় যুগ হয়ে গেল সে খেলছে, পেছনে ফিরে এ ঘটনায় তাকালে সে গর্ব অনুভব করবে না।’
অস্ট্রেলিয়ার সংবাদমাধ্যম এসইএন মরিসের উদ্ধৃতি প্রকাশ করেছে। মরিস অস্ট্রেলিয়ান রুলস ফুটবল এবং ক্রিকেট নিয়ে কাজ করেন। নাইন নেটওয়ার্কের এই প্রধান ফুটবল প্রতিবেদক বলেছেন, ‘কোহলির যে সম্পদ, তাতে ২০ শতাংশ ম্যাচ ফি তার জন্য হাতের ময়লা। আমি বিস্মিত হইনি, তবে হতাশ হয়েছি...আমার মতে, ব্যাপারটা যতটা গুরুত্বপূর্ণ, সে অনুযায়ী সিদ্ধান্ত নিতে না পারাটা আমার মনে হয় বিশ্ব ক্রিকেট ও আইসিসির জন্য বিব্রতকর।’
আইসিসির আচরণবিধিতে বলা হয়েছে, ইচ্ছাকৃতভাবে কিংবা না বুঝে, সেটা যেভাবেই হোক, ক্রিকেটে যেকোনো ধরনের শারীরিক সংঘর্ষ নিষিদ্ধ। তাই বেশির ভাগ বিশ্লেষক মনে করেছিলেন, বড় শাস্তিই পেতে যাচ্ছেন কোহলি। ম্যাচ রেফারি অ্যান্ডি পাইক্রফট যদি মনে করেন, কোহলি লেভেল টু পর্যায়ের অপরাধ করেছেন, তাহলে ৩ কিংবা ৪টি ডিমেরিট পয়েন্ট পেতে পারেন। ৪ ডিমেরিট পয়েন্ট পেলে এক ম্যাচের নিষেধাজ্ঞা হতে পারে, অর্থাৎ সিডনিতে শেষ টেস্টে তাকে না–ও দেখা যেতে পারে। দিন শেষে এমন সিদ্ধান্তে আইসিসির ওপর হতাশ হয়েছেন তারা।
সম্পাদক ও প্রকাশক: কাজী আবু জাফর
যোগাযোগ: । [email protected] । বিজ্ঞাপন ও বার্তা সম্পাদক: 01894944220
ঠিকানা: বার্তা ও বাণিজ্যিক যোগাযোগ : বাড়ি নম্বর-২৩৪, খাইরুন্নেসা ম্যানশন, কাঁটাবন, নিউ এলিফ্যান্ট রোড, ঢাকা-১২০৫।
© 2024 Sangbad Sarabela All Rights Reserved. Design & Developed By Root Soft Bangladesh